চুয়াডাঙ্গায় অরিন্দমের সুহৃদ স্মরণ দিবস পালিত
‘বিদায়ের শূন্যতায় বেদনাহত, তবু রেখে যাওয়া আদর্শে আলোকিত’ স্লোগানে চুয়াডাঙ্গার অরিন্দম সাংস্কৃতিক সংগঠনের আয়োজনে সুহৃদ স্মরণ দিবস পালিত হয়েছে। গতকাল রোববার সন্ধ্যায় জেলা শিল্পকলা অ্যাকাডেমির মুক্তমঞ্চে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সন্ধ্যা ছয়টায় মোমবাতি প্রজ্বলন এবং রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বিখ্যাত গান ‘আগুনের পরশমণি ছোঁয়াও প্রাণে’ সমবেতভাবে গেয়ে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করা হয়। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন অরিন্দমের সাধারণ সম্পাদক ও অনুষ্ঠান বাস্তবায়ন কমিটির আহ্বায়ক ইয়াকুব আলী জোয়ার্দার।
স্মৃতিচারণ করে বক্তব্য দেন মাথাভাঙ্গা নদী বাঁচাও আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ শাজাহান আলী, সংলাপ সাংস্কৃতিক গোষ্ঠীর সদস্য মতিয়ার রহমান, সরগম সাংস্কৃতিক সংগঠনের পরিচালক খন্দকার শাহেদুজ্জামান খোকন, কবি রিগ্যান এসকান্দার, কার্পাসডাঙ্গা নজরুল স্মৃতিসংঘের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম, চুয়াডাঙ্গা সাহিত্য পরিষদের সভাপতি ইকবাল আতাহার তাজ, জেলা শিল্পকলার সাবেক সাধারণ সম্পাদক মুন্সী জাহাঙ্গীর আলম মান্নান, জাসাস চুয়াডাঙ্গা জেলা শাখার শহিদুল হক বিশ্বাস, বাংলাদেশ প্রগতি লেখক সংঘের সাধারণ সম্পাদক কাজল মাহমুদ, উদীচী শিল্পী-গোষ্ঠী চুয়াডাঙ্গা জেলা সংসদের সভাপতি হাবীবী জহির রায়হান প্রমুখ।
এছাড়া মারা যাওয়া সুহৃদ পরিবারের পক্ষ থেকে স্মৃতিকথন করেন ওয়ালিউর রহমান মালিক টুল্লুর জ্যেষ্ঠ জামাতা অবসরপ্রাপ্ত ব্যাংক কর্মকর্তা জাহিদ হোসেন ও অ্যাড. আব্দুল ওহাবের স্ত্রী নূর-এ-আলম মোর্শেদা। কবিতা আবৃত্তি করেন সংগঠনের সহ-সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান মানিক ও জীবন সদস্য হেলাল হোসেন জোয়ার্দার।
অনুষ্ঠানের আলোচক হিসেবে বক্তব্য দেন অরিন্দম-চুয়াডাঙ্গার নাট্য সম্পাদক হিরন-উর রশীদ শান্ত। তিনি বলেন, ‘সুহৃদ স্মরণ দিবস আমাদের জীবনের এক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত। যেখানে আমরা আমাদের হারানো প্রিয়জনদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে একত্রিত হই। তাদের শিক্ষা এবং ভালোবাসা আমাদের সারা জীবন পথ দেখাবে।’
প্রধান আলোচক অরিন্দম-চুয়াডাঙ্গার নাট্যজন মো. আলাউদ্দীন বলেন, ‘শ্রীমন্ত টাউন হলের পরিকল্পনা ছিল একটি অডিটরিয়াম হবে, যা স্থানীয় সাংস্কৃতিক কার্যক্রমের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল। তবে তৎকালীন পৌরসভা রাজনৈতিক প্রভাবের কারণে এটি একটি বাণিজ্যিক শপিংমল হিসেবে নির্মাণ করা হয়। আমরা এটি ফের বাস্তবায়নের প্রস্তাব জানাই। যাতে সাংস্কৃতিক কার্যক্রমের জন্য একটি উপযুক্ত স্থান ফিরে পাওয়া যায়।’
প্রধান অতিথি জেলা কালচারাল অফিসার আল মামুন বিন সালেহ বলেন, ‘আজকের এই স্মরণ দিবসে আমদের যারা এখান থেকে চলে গেছেন, তাদের সবার প্রতি সম্মান জানাচ্ছি। তাদের কাজ এবং আদর্শ আমাদের মাঝে চিরকাল বেঁচে থাকবে।’
অরিন্দম চুয়াডাঙ্গার সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুল ইসলাম মালিক অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন এবং সমাপনী বক্তব্য দেন। তিনি বলেন, ‘এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আমরা আমাদের শোক এবং শ্রদ্ধাকে সম্মানের মাধ্যমে চিরকাল স্মরণ করব। আমাদের প্রিয় মানুষেরা আমাদের মাঝে অমর হয়ে রয়ে যাবে।’
অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন অরিন্দমের সাহিত্য প্রচার ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক দেলোয়ার হোসাইন বাপ্পী।